অখিল পাল; এক খ্যাতিমান ভাস্কর

অখিল পাল বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান ভাস্কর শিল্পী। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৮ অক্টোবর নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম নরেন্দ্র পাল এবং মাতার নাম সুধারানী পাল। তিনি বাবা মায়ের আট সন্তানের মধ্যে সপ্তম। 

তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ইতিহাসের উপর তৈরি করা অনেক খ্যাতিসম্পূর্ণ ভাস্কর্য তৈরি করে অনেক সু-খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি লুনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ভর্তি হন নাজিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার কলেজ জীবন কাটে আটপাড়া কলেজে। অখিল পাল নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বিএফএ করেন। শৈশব-কৈশোরে এই শিল্পীর মধ্যে স্বভাবজনিত বৈপরীত্ব লক্ষ করা যায়। তিনি কাজের ক্ষেত্রে ছিলেন একেবারেই ঘরমুখো। ছোটবেলা থেকেই ভাস্কর্য শিল্পের প্রতি তার সীমাহীন আগ্রহ ছিল। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তিনি প্রতিমা তৈরি করতেন। এ কাজে তাকে অনুপ্রাণিত করতেন তার মা সুধারানী পাল ও বড় ভাই সুভাষচন্দ্র পাল। প্রতিমা বানাতে বানাতে একসময়ে তিনি ভাস্কর্য শিল্পের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরিতে পারদর্শী হয়ে উঠেন।

২০০৪ সালে অখিল পাল প্রথম রামকৃষ্ণ মিশনে নটরাজের ভাস্কর্য তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। একই বছর জিয়াউল হক জিয়ার বাড়ির সামনে নোয়াখালীতে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভাস্কর্য তৈরি করেন। এই দুটো কাজ তাকে শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দেয়। পরবর্তীতে তিনি তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজটি করেন ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি চত্বরে ‘মোদের গরব’ শিরোনামে ভাষা শহীদ রফিক, শফিক, জব্বার, সালাম, বরকতের ভাস্কর্য তৈরি করে। ভাস্কর্যটি নান্দনিকতার দিক থেকে অসাধারণ। বায়ান্নর মহান ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ এ দুটো বিষয় নিয়েই অখিল কাজ করেছেন বেশি। 

অখিল পালের তৈরিকৃত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ভাস্কয হচ্ছে
১) নটরাজের ভাস্কর্য,
২) মোদের গরব,
৩) বিজয়োল্লাস,
৪) ওনুয়া স্মৃতি ভাস্কর্য (ওনুয়া স্মৃতি স্তম্ভ),
৫) ফিরে দেখা একাত্তর,
৬) শ্রেষ্ঠ সন্তান,
৭) স্বাধীনতা চত্বর,
৮) অদম্য বিজয়,
৯) ভাস্কর্য প্রজন্ম।

অখিল পাল বাংলাদেশ মানবাধিকার নাট্য পরিষদ থেকে ২০১৪ সালে গুণীজন সংবর্ধনা পুরস্কার লাভ করেন।

Share on Google Plus

About Ripon Abu Hasnat

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন