হযরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (রাহঃ) একজন সুফি দরবেশ। নেত্রকোণা সদর উপজেলার মদনপুর নামক স্থানে তাঁর সমাধি বা মাজার রয়েছে। বাংলায় আগমনকারী সুফি-দরবেশদের মধ্যে শাহ্ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী অন্যতম। অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী এ সুফি-দরবেশ সঙ্গে ১২০ সহচর ও শিষ্য নিয়ে এ বাংলায় আসেন।
কথিত আছে, ১০৫৩ খ্রীস্টাব্দের কিছু পূর্বে পশ্চিম এশিয়ার তুরস্কের সেলজুক রাজ্য থেকে সুফী সাধক শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী(রহঃ)-এর আগমন। আরো কথিত আছে, তুরস্ক সাম্রাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য ছিলেন শাহ সুলতান রুমী (রাহঃ)। তিনি সম্রাটের ছোট ভাই এবং সে দেশের একটি প্রদেশের গভর্নর হয়েও রাজ্য শাসন ও রাজকীয় ভোগবিলাস প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহপাকের সান্নিধ্য লাভের আশায় ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে জন্মভূমি তুরস্ক থেকে এসেছিলেন সুদূর বাংলার এক প্রান্তসীমা নেত্রকোনা জেলার মদনপুর নামক গ্রামে। ঐতিহাসিকদের মতে, এটিই ইসলাম প্রচারে আগত প্রথম মিশন। আজ সারা দেশেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মুসলমান। মুসলমানদের এ সংখ্যাধিক্যের মূল কারণ হজরত শাহ সুলতান রুমী (রহ.)। প্রসংগত উল্লেখ্য, রোম সম্রাজ্য বিজয়ী তুরস্ক রাজ্যকেই রোম সম্রাজ্য বলা হতে। এর শাসককে বলা হতো রুমী এবং সে রাজ্যের সুলতানের ছোট ভাই হিসেবে শাহ সুলতানও রুমী উপাধিতে অভিহিত করা হতো ।
ঐতিহাসিকদের মতে এটিই ইসলাম প্রচারে আগত প্রথম মিশন। তখন বাংলায় চলছিল বৌদ্ধ ও সনাতন হিন্দুদের সংঘর্ষ। আবার হিন্দুদের বর্ণপ্রথাতেও ক্ষতবিক্ষত ছিল লোক সমাজ। এই জটিল মূহুর্তে ইসলামের সুফিবাদের বাণী আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় গোটা সমাজকে। তাই তিনি উদার-উদাস প্রকৃতির বিচিত্র প্রাকৃতিক শোভার সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন ইসলামের বাণী, শান্তির চেতনা। দলে দলে মানুষ ইসলামের পতাকাতলে আসতে শুরু করে।


0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন