বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য ও চর্যাপদকর্তা কাহ্নপা

হাজার বছর আগের বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য ও চর্যাপদকর্তা কাহ্নপার আসল নাম কৃষ্ণাচার্য পাদ। কৃষ্ণাচার্য নামটিই অপভ্রংশে হয়েছে কাহ্নপা, কনহপা, কাহ্নিল পা। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদের পদ রচয়িতা কবিদের মধ্যে কাহ্নপাই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। ঐতিহাসিকগণ কাহ্নপাকে উড়িষ্যার অধিবাসী বলে মনে করলেও বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সাহিত্য গবেষক অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া তাঁর “ নেত্রকোনা: অতীত ও বর্তমান” গবেষনামূলক রচনায় কাহ্নপাকে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানার কৃষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে প্রমাণ করেন। কাহ্নপা রচিত পদগুলিতে নেত্রকোনার আঞ্চলিক ভাষার বহুল ব্যবহার অধ্যক্ষ জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়ার যুক্তিকে অকাট্য বলে স্বীকার করতে বাধ্য করেছে। 

কাহ্নপা তার পরিণত বয়সে বিখ্যাত সোমপুর বিহারের অন্যতম বিখ্যাত আচার্য্য ছিলেন। কাহ্নপা সম্প্রদায়গতভাবে ব্রাহ্মণ হলেও সহজিয়া মতের দীক্ষা নিয়ে সিদ্ধাচার্য্য, মন্ডলাচার্য্য উপাধিতে ভূষিত হন। চর্যাপদের ২৩ জন কবির সাড়ে ছেচল্লিশটি পদের মধ্যে কাহ্নপা রচিত পদের সংখ্যা সর্বমোট ১৩ টি। কাহ্নপাদ গীতিকা, যোগ রত্নমালা, হেবজ্রসাধন, হেবজ্রপদ্ধতি, মন্ডলবিধি, তত্ত্বোদ্যোৎকার প্রভৃতি গ্রন্থের রচয়িতা কাহ্নপা পাল বংশের রাজা দেবপালের সময় আনুমানিক ১০ম শতকে ( ৯০০-৯৫০) বর্তমান ছিলেন।
Share on Google Plus

About Ripon Abu Hasnat

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন